Header Ads Widget


রাগ বর্জন করার উপায়

সামান্য বিষয়। খাবার টেবিলে একটুখানি ঝোল পড়ে আছে। হয়তো যিনি পরিষ্কার করেছেন তিনি খেয়াল করেননি। ঘরের কর্তাবাবু তা দেখলেন। চিৎকার দিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটালেন। তার কথা, খাবার টেবিল নোংরা কেন? বউকে বকাবকি করলেন। এক পর্যায়ে গায়েও হাত তুললেন। অথচ এটা কোনো বড় বিষয় ছিল না। তবুও তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেল। অতিরিক্ত রাগ মানুষকে ধ্বংস করে। নবী করিম (সা.) রাগ দমন করতে বলেছেন। নবী করিম (সা.) বলেন রাগ বর্জন করো। সাহাবিরা কয়েকবার বললেন, আরও নসিহত করুন। প্রত্যেকবার রাসুল (সা.) বললেন রাগ বর্জন করো। পবিত্র কোরআনে নেককার মানুষের গুণাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে আল্লাহ বলেন, ‘যারা সচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগ সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুত আল্লাহ সৎ কর্মশীলদেরই ভালোবাসেন।’ (সূরা আলে ইমরান : ১৩৪)। এক হাদিসে বলা হয়েছে, প্রকৃত বাহাদুর সেই ব্যক্তি, যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে। প্রাত্যহিক জীবনে নানা রকম অসংগতি চোখে পড়ে। কখনও কখনও অন্যের বোকামির শিকার হতে হয়। রাগ তখন হতেই পারে। রাগ কীভাবে দমন করবেন। ইসলাম সে শিক্ষাও দিয়েছে। রাগ দমনের উপায় প্রিয় নবী (সা.) বলে গেছেন, ‘যদি তোমাদের কেউ দাঁড়ানো অবস্থায় রাগান্বিত হয়ে পড়ে, তবে তার উচিত হবে বসে পড়া। যদি তার রাগ কমে যায়, তবে ভালো; নয়তো তার উচিত হবে শুয়ে পড়া।’ (তিরমিজি)। অজু করলে রাগ কমে যায়। নবী করিম (সা.) রাগান্বিত অবস্থায় অজু করতে বলেছেন। রাগ আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। শয়তান হলো আগুনের তৈরি। পানিই পারে আগুন নেভাতে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘রাগ আসে শয়তানের পক্ষ থেকে; শয়তানকে তৈরি করা হয়েছে আগুন থেকে, আর পানির মাধ্যমে আগুন নেভানো সম্ভব। তাই তোমাদের মধ্যে কেউ যখন রাগান্বিত হয়ে পড়ে, তার উচিত অজু করা।’ (আবু দাউদ)। রাগ দমনের জন্য ‘আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রাজিম’ পড়া যায়। নবী করিম (সা.) বলেন, আমি এমন একটি কালেমা জানি, যা পাঠ করলে ক্রোধ দূর হয়ে যায়। আর তা হলো ‘আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রাজিম।’ অর্থাৎ আমি বিতাড়িত শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লহর কাছে পানাহ চাই। (মুসলিম : ৬৩১৭)। অজু করে নামাজে দাঁড়িয়ে যাওয়া রাগকে প্রশমিত করতে পারে। কারণ বান্দা যখন আল্লাহর সামনে দাঁড়ায়, তখন দুনিয়ার চিন্তাভাবনা, রাগ দূর হয়ে যায়। ঘটনা যা তা তো ঘটে গেছে। তারপর রাগারাগি করে কী লাভ? তবে ওই রকম ঘটনা যেন না ঘটে। সে জন্য পদক্ষেপ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ নয় কি?

-  মুহাম্মদ শফিকুর রহমান 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ