ভাবলে এখনো চোখে জল আসে, ক্লাস সিক্স থেকেই আমার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু! তখন তো বুঝতামই না উদ্যোক্তা কী জিনিস, পরিকল্পনাও ছিল না কিছু। শুধু ক্লাস ফাইভের চানু স্যারের কথাটা মনে গেঁথে ছিল ভীষণভাবে। স্যার সেদিন বলেছিলেন, "তোমরা চাইলে তোমাদের লেখাপড়ার খরচ নিজেরাই জোগাড় করতে পারো। এর জন্য কিন্তু অনেক খাটতে হবে না। ধরো, বাড়ির পাশে যদি খালি জায়গা থাকে, সেখানে কিছু কলাগাছ লাগিয়ে দিলে বছর শেষে কলা বিক্রি করে খাতা, কলম আর স্কুলের বেতন হয়ে যাবে।" স্যারের এই কথাটা সেদিন আমার ছোট্ট মনে কী যে দোলা দিয়েছিল, তা বলে বোঝাতে পারব না!
বাড়িতে ফিরে যেন এক নতুন উদ্যম ভর করলো আমার ওপর! দেরি না করে বাড়ির পাশে জমিতে একগাদা কলাগাছ লাগিয়ে দিলাম। ভাবলাম, এ তো কেবল শুরু! শুধু কি কলাগাছ? স্কুলের টিফিনের টাকা জমিয়ে জমিয়ে আরও কত স্বপ্ন বুনেছিলাম তখন! সেই জমানো টাকা দিয়ে কিনে আনলাম অনেক পেয়ারা গাছের চারা। আমার চোখে তখন কত শত স্বপ্ন খেলা করছে, বলে বোঝানো যাবে না।
ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু করেছিলাম আমার দেশীয় চারা গাছের নার্সারি। প্রথমে অল্প কিছু চারা দিয়ে শুরু হলেও, আমার অক্লান্ত পরিশ্রম আর ভালোবাসা দিয়ে সেই নার্সারি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলো। আম চারা, কাঁঠাল চারা, জাম চারা আরও বিভিন্ন প্রজাতির চারাগাছ দিয়ে আমার নার্সারি যেন প্রাণ ফিরে পেলো। একসময় সেই নার্সারিটা বিভিন্ন প্রজাতির চারাগাছের এক অপূর্ব সমারোহে পরিণত হলো।
নিজের হাতে গড়া সেই নার্সারি থেকে বেছে বেছে বেশ কিছু আম, কাঁঠাল, জাম, জলপাই সহ নানান ফলের চারা এনে বাড়ির পাশে, টেকে ও অন্যান্য জমিতে রোপণ করলাম। নিজের হাতে লাগানো চারাগুলো যখন বড় হয়ে উঠছে, সেই দৃশ্য দেখতে আমার কী যে ভালো লাগে! এই কাজটা শুধু একটা উদ্যোগ ছিল না, ছিল আমার ভেতরের এক গভীর ভালোবাসার প্রকাশ, যা আমাকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণা যোগায়।
ক্লাস সেভেনে উঠে পড়ার জন্য চলে গেলাম বাড়ির বাইরে, খালার বাসায়। সেখানেই পরিচয় হলো দিপু ভাইয়ের সাথে, যার একটা কম্পিউটারের দোকান ছিল। একদিন কথায় কথায় দিপু ভাই বললেন, "ব্যবসা করতে টাকা লাগে না, লাগে অন্য কিছু।" কথাটা শুনে সেদিন একদম বোকা হয়ে গিয়েছিলাম, এর অর্থ বুঝিনি। প্রশ্নও করিনি।
পরে একদিন বাড়ি আসার পথে আমার একমাত্র ফুফা বিশিষ্ট ব্যবসায়ি মোঃ ইব্রাহিম মাঝি’র সাথে দেখা। তিনিও তার পাশের একজনকে একই কথা বলছেন, "ব্যবসা করতে টাকা লাগে না, লাগে অন্য কিছু।" তখন সেই লোকটা জানতে চাইল, কী সেই 'অন্য কিছু'? ফুফা বিস্তারিত বুঝিয়ে বললেন। আমিও মন দিয়ে শুনলাম সবটা। আহা, সেদিন কী যে এক নতুন দিগন্ত খুলে গেল আমার সামনে!
অবসর পেলেই দিপু ভাইয়ের দোকানে গিয়ে আড্ডা দিতাম। সেদিনের পর থেকে দিপু ভাই যেন আমার কাছে এক নতুন প্রেরণা হয়ে উঠলেন। এর মধ্যেই একদিন দিপু ভাই বললেন, "চাইলে আমার দোকানে কাজ করে হাত খরচ চালাতে পারো।" দিপু ভাইয়ের কথা শুনে যেন হাতে চাঁদ পেলাম! দেরি না করে লেগে পড়লাম কাজে। এই তো, এভাবেই শুরু হয়েছিল আমার ছোট্টবেলার বড় স্বপ্ন দেখার সেই দিনগুলো!
আমার পৃথিবীটা যেন কবিতার খাতা আর গল্পের বইয়ের পাতায় বাঁধা। যখন নিজের হাতে কিছু লিখি, সে কবিতা হোক বা ছোট গল্প, তখন মনে হয় এক অন্য জগতে হারিয়ে গেছি। কেউ কেউ যখন আমার লেখা মনোযোগ দিয়ে শোনে আর উৎসাহ দেয়, তখন মনে হয় এটাই যেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। এই প্রশংসাগুলো আমার ভেতরের লেখক সত্তাকে আরও বেশি করে জাগিয়ে তোলে, আরও নতুন কিছু সৃষ্টির প্রেরণা যোগায়। এই অনুপ্রেরণাগুলোই আমার ছোট ছোট স্বপ্নগুলোকে ডালপালা মেলতে শেখায়।
ক্লাস নাইনে সবে উঠেছি। দিপু ভাই একদিন এসে বললেন, "আমার এক বন্ধুর ছেলেকে একটু প্রাইভেট পড়াতে হবে।" আমি তো শুনেই আকাশ থেকে পড়লাম! "দিপু ভাই, আমি ক্লাস নাইনে পড়ি, ক্লাস এইটের ছেলেকে কী পড়াবো?" আমার আত্মবিশ্বাস তখন একেবারেই তলানিতে। কিন্তু দিপু ভাইয়ের চোখে আমি দেখলাম এক অদ্ভুত বিশ্বাস। তিনি বললেন, "তুমি পারবে। কাউছার পড়াশোনায় তেমন ভালো না, ও তো ক্লাস সেভেন থেকে এইটে উঠতেই চাইছিল না শিক্ষকরা। দু-একটা বিষয়ে পাশ করেছে, বাকি সব ফেল। ওর বাবার অনেক টাকা, বড় হলে তো নিজেদের ব্যবসা দেখবে।" দিপু ভাইয়ের কথায় একটা ম্যাজিক ছিল। সেই ম্যাজিক আমাকে রাজি করিয়ে ফেলল। ঠিক আছে, দিপু ভাই যখন বলছেন, তখন পড়াবোই।
কাউছারকে পড়ানো শুরু করলাম। ছেলেটা পড়াশোনায় ভালো না হলেও, আমার প্রচেষ্টা আর ওর সামান্য পরিশ্রমে প্রথম সাময়িকে ফল তুলনামূলক ভালো হলো। আর দ্বিতীয় সাময়িকে তো সব বিষয়ে পাশ! আমার কাছে এটা ছিল এক অবিশ্বাস্য জয়। কাউছারের এই সাফল্য দেখে ওর আরও চার বন্ধু আমার কাছে পড়তে চলে এল। তখন মনে হলো, এ তো শুধু পড়ানো নয়, এ যেন ভবিষ্যতের বীজ বোনা!
পরের বছর কাউছারদের ব্যাচ নিয়ে প্রতিষ্ঠা করলাম নিজের কোচিং সেন্টার – "ব্রিলিয়েন্ট কোচিং সেন্টার"। শুধু একটা নয়, একে একে আরও দুটো শাখা খুললাম। কোচিং সেন্টারে প্রতিটি বিষয়ে সেরা শিক্ষক নিয়োগ দিলাম, যেন শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ মানের শিক্ষা পায়।
একদিন কোচিং সেন্টারেরই শিক্ষক নিতাই বাবু আমাকে একটা মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানিতে কাজ করার প্রস্তাব দিলেন। আমার মনে হলো, ভাগ্য যেন নতুন এক দিগন্ত খুলে দিচ্ছে! কাজটা ভালোভাবে বুঝে যোগদান করলাম ট্রেইনার হিসেবে। ভালো লাগতে শুরু করল এই নতুন জগতটাও।
কোচিং সেন্টারে পড়ানোর সুবাদেই একদিন মাথায় এলো একটা নতুন আইডিয়া। ইংরেজি গ্রামার নিয়ে একটা বই লিখলে কেমন হয়? যেই ভাবা সেই কাজ! প্রকাশ করলাম 'জুস অফ ইংলিশ গ্রামার'। পরে আরও তথ্যবহুল আর বিস্তারিতভাবে লিখলাম “Student’s Favourite Samahar English Grammar” বইটি।
আমি সবসময় বিশ্বাস করি, একটা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা জরুরি। আর এই দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার জ্ঞান অর্জন করাটা অপরিহার্য। কারণ ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা। শুধু ইংরেজি জানলেই হবে না, এর সঠিক ব্যবহারও শিখতে হবে। আর সঠিক ব্যবহারের জন্য ইংরেজি গ্রামারের সঠিক জ্ঞান থাকাটা অত্যাবশ্যক। আমার এই বইটি সেই ভাবনা থেকেই লেখা, যেন শিক্ষার্থীরা ইংরেজির সঠিক ব্যবহার শিখে নিজেদের ভবিষ্যতের পথ আরও মসৃণ করতে পারে।
আজ ডিজিটাল দুনিয়া আমাদের প্রতিটি নিঃশ্বাসে মিশে আছে। তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার এখন আর শুধু স্বপ্ন নয়, বাস্তব। কোটি কোটি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে এই প্রযুক্তির হাত ধরে। আমাদের দেশে হয়তো এর আগমন একটু দেরিতে হয়েছে, কিন্তু এর বিস্তৃতি এখন চোখে পড়ার মতো। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, প্রযুক্তি ছাড়া আজকের পৃথিবী সত্যিই অচল। গবেষণা থেকে শুরু করে ব্যবসা, শিক্ষা, কৃষি, চিকিৎসা, ঘর থেকে বাইরে, মহাকাশ থেকে মহাসমুদ্র পর্যন্ত, সবখানেই আজ প্রযুক্তির অবাধ ছোঁয়া। এক কথায়, গতিশীল জীবন মানেই প্রযুক্তির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
তথ্য-প্রযুক্তির এই জাদুকরী স্পর্শে আমরা গোটা বিশ্বকে যেন হাতের মুঠোয় পেয়ে গেছি। বিশ্বগ্রাম কথাটার সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। একটা ছোট গ্রামের মতো, যেখানে সবাই সবার সাথে সংযুক্ত, ঠিক তেমনি তথ্য-প্রযুক্তি আজ বিশ্বের সকল মানুষকে এক সুতোয় বেঁধেছে। মুহূর্তের মধ্যে আমরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি, তথ্য আদান-প্রদান করতে পারছি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে, এর যেমন ইতিবাচক দিক আছে, তেমনি নেতিবাচক দিকগুলোও আমাদের অজানা নয়।
আমি বিশ্বাস করি, প্রযুক্তি হতে পারে মানবকল্যাণের এক শক্তিশালী মাধ্যম। এই লক্ষ্যেই আমি বাংলার মানুষের কাছে তথ্য-প্রযুক্তিকে আরও সহজবোধ্য করে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। প্রযুক্তির জটিল বিষয়গুলো সহজে বোঝানোর জন্য প্রযুক্তি বিষয়ক আর্টিকেল লিখেছি। আর এই কাজ আমি আজও অব্যাহত রেখেছি! আমার লেখাগুলো বিভিন্ন পত্রিকা, ম্যাগাজিন, ওয়েবসাইট, নিউজ পোর্টাল ও ব্লগে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে, যা আমাকে ভীষণ আনন্দ দেয়। এই কাজগুলো করতে পেরে আমি গর্বিত, কারণ আমি জানি, এর মাধ্যমে আমি বাংলার ডিজিটাল যাত্রায় একটা ক্ষুদ্র হলেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারছি।
মনের গভীরে জমে থাকা ভাবনাগুলো যখন একে একে অক্ষর হয়ে বের হয়, তখন মনে হয় এক অন্য জগতে প্রবেশ করেছি। কবিতা, উপন্যাস, গান, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, তথ্য ও প্রযুক্তি সহ সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় আমি আমার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছি। আমার লেখা কিছু বইয়ের নাম : ১। পলাশের সেই নদী। 2। স্বপ্নের রুমি। ৪। নষ্ট জীবনের কষ্ট। ৫। Student’s Favourite Samahar English Grammar ৬। সমাহার সাধারণ জ্ঞান। ৭। ঘরে বসে নিজে নিজেই শিখুন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড।৮। ঘরে বসে নিজে নিজেই শিখুন মাইক্রোসফট এক্সসেল। ইলিস্ট্রেটল ১০, ঘরে বসে নিজে নিজেই শিখুন এডোবি ফটোসপ। ১১। সাথী তুমি আজও আছো হৃদয়ে। ১২। তবুও ভালোবাসি । ১৩। আমাকে যদি ভালোবাস তোমাকে ভালোবাসিবো আমি ।
এই লেখাগুলো যখন পিডিএফ আকারে বা ছাপা বই হয়ে প্রকাশিত হয়, তখন মনে হয় আমার স্বপ্নগুলো ডানা মেলেছে। এটা আমার জন্য কেবল একটি স্বীকৃতি নয়, এটা যেন আমার ভেতরের লেখককে আরও বেশি করে ফুটিয়ে তোলার এক আনন্দময় যাত্রা।
আমাদের টেকের জমিতে তখন সবেমাত্র এক হাজার আকাশী গাছের চারা রোপণ করেছি। বুকভরা স্বপ্ন, একদিন এই চারাগুলো বিশাল বৃক্ষে পরিণত হবে। কিন্তু তারপরই একটা ভাবনা আমাকে পেয়ে বসলো, এই গাছগুলো তো বিক্রি করতে ১২-১৫ বছর লেগে যাবে! এত দীর্ঘ সময় কি বিনিয়োগের টাকা ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করা সম্ভব? মনে হলো, না, এভাবে চলবে না। একটা বিকল্প পরিকল্পনা দরকার।
মাথায় একটাই চিন্তা ঘুরছে, কীভাবে প্রথম বছর থেকেই বিনিয়োগের টাকাটা তুলে আনা যায়। তখনই এক অসাধারণ বুদ্ধি এলো! আকাশী চারাগাছগুলোর ফাঁকে ফাঁকে রোপণ করলাম হলুদ, আদা আর সেই সাথে তিল। এর ফলে প্রথম বছরেই আমার বিনিয়োগের টাকা ফেরত পেয়ে গেলাম, যা ভবিষ্যতের জন্য দারুণ এক অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ালো।
পরের বছরের জন্যেও ছিল আমার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। যেহেতু আকাশী গাছ তখনও ছোট, তাই গরু-ছাগল এসে চারাগুলো নষ্ট করে দিতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে এবং একই সাথে জমিকে আরও উৎপাদনশীল করতে, আমি আকাশী গাছের নিচে আনারসের চারা রোপণ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। এতে একদিকে যেমন চারাগুলো রক্ষা পাবে, তেমনি আবার নতুন করে অর্থ উপার্জনের পথও তৈরি হবে। এই পদক্ষেপই স্বপ্ন পূরণের পথে আমাকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।
সময় যত গড়িয়েছে, স্বপ্নগুলো তত বড় হয়েছে। স্কুলের সেই পুরনো বন্ধু জাহিদ আর শিশির একদিন আমার কাছে এলো এক দারুণ প্রস্তাব নিয়ে, একটা সমবায় সমিতি! তাদের চোখে দেখলাম এক নতুন দিনের স্বপ্ন, আর সেই স্বপ্ন যেন আমার মধ্যেও সংক্রমিত হলো। এলাকার অনেক বেকার যুবক ছিল, তাদের জন্য কিছু করার একটা তীব্র আকাঙ্ক্ষা আমার মনে সব সময়ই ছিল। আর সেই আকাঙ্ক্ষার ফলস্বরূপ জন্ম নিল ‘ডিজিটাল রূপকল্প মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ’। এটা শুধু একটা প্রতিষ্ঠান ছিল না, এটা ছিল মানুষের জন্য কিছু করার এক সম্মিলিত প্রয়াস, এক নতুন আশার আলো।
বিবিএ'র পড়াশোনার চাপ, ঢাকা-কাপাসিয়া অবিরাম দৌড়াদৌড়ি, জীবনটা যেন রোলার কোস্টারের মতো চলছিল। কিন্তু এই ব্যস্ততার মধ্যেই আমার ভেতরে লুকিয়ে থাকা উদ্যোক্তা সত্তাটা যেন আরও বেশি করে জেগে উঠছিল। ব্যবসার প্রচার আর প্রসারকে সহজ করার জন্য মনে হলো, একটা অনলাইন নিউজ পোর্টাল থাকাটা খুব জরুরি। আর সেই ভাবনা থেকেই জন্ম নিল ‘নিউজ সমাহার’ কাপাসিয়া থেকে প্রকাশিত প্রথম জাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এটা শুধু একটা পোর্টাল নয়, এটা যেন আমার অঞ্চলের কণ্ঠস্বর, যেখানে সবার কথা বলা হবে।
এরপর ই-কমার্স বিজনেসের ধারণা এলো সাথে ফিজিক্যাল শো-রুম করলাম। এভাবে একটার পর একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে লাগলাম: সমাহার বিডি ডট কম, সমাহার সফট, বুকস সমাহার, সমাহার কল্যাণ ফাউন্ডেশন, আমার বিজনেস ২৪ ডট কম। আর ভবিষ্যতের জন্য সমাহার টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (প্রস্তাবিত)। এই সব প্রতিষ্ঠান নিয়েই গঠিত হলো আমার স্বপ্নের সমাহার গ্রুপ।
আর দেরি নয়, আজই শুরু করো! তোমার ভেতরের উদ্যোক্তাকে জাগিয়ে তোলো, কারণ প্রতিটি বড় সাফল্যের শুরু হয় ছোট একটি পদক্ষেপ দিয়ে। ভয় পেও না ভুল করতে, কারণ ভুলগুলোই তোমার সেরা শিক্ষক। প্রতিবার হোঁচট খেয়ে নতুন করে শিখবে, আর সেই শেখার আলোয় তোমার পথ আরও স্পষ্ট হবে।
মানুষের পাশে দাঁড়াও, তাদের প্রয়োজন বোঝার চেষ্টা করো। তোমার সততা, তোমার অক্লান্ত পরিশ্রম আর মানুষের প্রতি তোমার গভীর ভালোবাসা , এইগুলোই হবে তোমার সবচেয়ে বড় সম্পদ, যা কোনো টাকাপয়সার বিনিময়ে কেনা যায় না। এই গুণগুলোই তোমাকে একজন সফল উদ্যোক্তার পাশাপাশি একজন সত্যিকারের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। তুমি শুধু স্বপ্ন দেখবে না, তুমি সেই স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রূপান্তর করে দেখাবে! তোমার হাতেই তোমার ভবিষ্যৎ। তাহলে, আজই সেই প্রথম পদক্ষেপটা নাও! শুভ কামনা।
লেখক: এম এস হাবিবুর রহমান, সম্পাদক ও প্রকাশক, নিউজ সমাহার।
0 মন্তব্যসমূহ